1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

এই যুবারা কেন জাতীয় দলে বড় সাফল্যের দেখা পান না, দায় কার?

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৫৫ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক: চার বছর আগে আকবর আলীর নেতৃত্বে পারভেজ ইমন, তানজিদ তামিম, মাহমুদুল হাসান জয়, তাওহিদ হৃদয়, শাহাদাত হোসেন দিপু, শরিফুল আর তানজিম সাকিবরা যখন বিশ্বকাপ জয় করে দেশে ফিরে এসেছিলেন, তখনও আনন্দের হিল্লোল বয়ে গিয়েছিল। একটা ভালো লাগার পরশ জেগেছিল সবার মনে।

এবারও তাই। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এবং আরব আমিরাতকে পেছনে ফেলে এশীয় যুব ক্রিকেটে সেরা হয়ে দেশে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ যুব দল। এবারও ক্রিকেট ভক্ত ও সমর্থকরা নিজ দেশের যুবাদের পারফরম্যান্স, কৃতিত্ব ও সাফল্যে উদ্বেলিত। একটি প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন মাহুজুর রহমান রাব্বি, আশিকুর রহমান শিবলিরা।

কিন্তু একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ২০২০ সালেও উঠেছিল, এবার এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও উঠেছে। তা হলো বয়সভিত্তিক দল অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে বিশ্বসেরা হয়েছে তার প্রকৃত সুফল কি আমরা কখনো উপভোগ করতে পেরেছি? আমাদের জাতীয় দল কি কখনো এশিয়া কাপ জিততে পেরেছে? বিশ্বসেরা হওয়া বহু দূরে, আমরা কখনো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও খেলতে পারিনি।

পারভেজ ইমন, তানজিদ তামিম, তাওহিদ হৃদয়, তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলামরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো নয়ই, কেন দেশের ক্রিকেটেও বড় তারকা হতে পারছেন না! তাদের সাফল্য কেন অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকছে? কেন তারা জাতীয় দলে এসে হারিয়ে যাচ্ছেন? সেই দায়িত্বটা কি তাদের না ক্রিকেট বোর্ডের?

এবার ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে এশিয়ার যুবাদের ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরছেন মাহফুজুর রহমান রাব্বি, মারুফ মৃধা, শিবলিরা।

কেউ কি নিশ্চিত করে বলতে পারবেন, এদের মধ্য থেকে কেউ একজন তামিম, সাকিব কিংবা মুশফিক হিসেবে বেরিয়ে আসবেন? অনেকে ফোড়ন কেটে বলতে পারেন, হবে না যে তারই বা গ্যারান্টি কি? হতেও তো পারেন।

হ্যাঁ, তা পারেন। কিন্তু ইতিহাস তো তা বলে না। ইতিহাস বলছে বাংলাদেশ এর আগে যুব ক্রিকেটে অনেকবারই নজর কাড়া সাফল্য দেখিয়েছে; কিন্তু সেখানে সাফল্য দেখানো ক্রিকেটাররা জাতীয় দলে আসার পর তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারছে না। তাই সবার মনে একটাই প্রশ্ন, যুবাদের হাত ধরে আসা সাফল্যের পথে হেঁটে বাংলাদেশ কেন মহাদেশীয় ও বিশ্ব আসরে সফল হতে পারে না? সে ব্যর্থতার দায় কার? বিসিবির? নাকি যুব ক্রিকেটারদের?

আমার আজকের লেখার প্রতিপাদ্য বিষয় সেটাই।

সত্যিকার অর্থে দায় আছে দুপক্ষেরই। ২০২০-এর বিশ্বকাপ আসরে পারভেজ ইমন, তাওহিদ হৃদয়, তানজিদ তামিম, মাহমুদুল হাসান জয়, শাহাদাত হোসেন দিপু, শরিফুলরা ভালো খেলেছেন; কিন্তু এ খেলোয়াড়রা যুব দলের হয়ে যতটা সাবলীল, স্বচ্ছন্দ আর সফল ছিলেন, জাতীয় দলে ততটা হতে পারছেন না। একইভাবে পেছন ফিরে তাকালে, দেখা যাবে তাদের পূর্বসুরি এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার, লিটন দাসও বয়সভিত্তিক দলে সেরা পারফরমার ছিলেন; কিন্তু জাতীয় দলে এসে তারা কেউই সাকিব, তামিম এমনকি মুশফিকের মতোও হতে পারছেন না।

এই না পারার একটা দায় ক্রিকেট বোর্ডেরও আছে। সেটা কেমন? আসুন জেনে নেই।

ক্রিকেটাররা যখন অনূর্ধ্ব-১৯ পার হয়ে ২০-এ পা রাখেন, তখন তারা একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপবাসীর মতো হয়ে যান। না যুব দলে খেলতে পারেন না জাতীয় দল থেকে ডাক আসে। ঠিক ওই সময় এ প্রতিভাগুলোর সঠিক পরিচর্যা কম হয়। তারা যুব দলে খেলার সময় যতটা আদরে ছিলেন, যুব দল থেকে বেরিয়ে ঠিক ততটাই অনাদরে পড়ে যান।

তাদের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হয় কম। অথচ ওই সময়ই প্রতিভাগুলোর সঠিক পরিচর্যা প্রয়োজন। তাদের মানোন্নয়নের জন্য উচ্চতর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার কাজটা বিসিবির। বোর্ড সেই কাজটা যে একদমই করে না, তা নয়। করে। তবে যতটা সাজানো গোছানো আর দক্ষতা এবং দুরদর্শিতার সাথে করার কথা তা হয় না।

‘এ’ দল, এইচপি, বিসিবি একাডেমি কিংবা বেঙ্গল টাইগার নামের দলগুলোর সঙ্গে রেখে ভবিষ্যতের জন্য তৈরির কথা বিসিবি প্রতিবার বলে। সেটা শুধু মুখেই থাকে, যুব দলে ভালো খেলা মেধাবী ও প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের এইচপির ট্রেনিং ক্যাম্পে রেখে ভবিষ্যতের জন্য তৈরির ব্যবস্থা করা হয়।

সেখানেও বিদেশি কোচ আছেন লোকাল কোচেরাও কাজ করেন। কিন্তু একটা কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাহলো যুব পর্যায় আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মধ্যে গুণগত মানের বিস্তর ফারাক। একটা তরুণ ও যুবা যে পরিমাণ মেধা নিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে সফল হতে পারেন, ঠিক সেই মেধা, গুণাগুণ, টেকনিক, স্কিল নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হওয়া সম্ভব নয়।

মানের উন্নয়ন জরুরি ও একান্তই অত্যাবশ্যক। কাজেই যুব দলের হয়ে খেলা শেষে জাতীয় দলের হয়ে খেলা শুরুর আগেই সেই ক্রিকেটারদের মানোন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়া এবং যথাযথ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ খুব জরুরি। সেই উন্নয়নের পূর্ব শর্তই হলো, যুব দলের হয়ে খেলা অবস্থার ভুল-ত্রুটি শুধরে ফেলা। টেকনিক ও স্কিলের উন্নয়ন ঘটানো এবং একটু সিনিয়র পর্যায়ে মানে ‘এ’ দলের হয়ে নিয়মিত দেশে ও বাইরে খেলার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। সেই কাজগুলোই হয় কম।

সবার আগে ওই যুবাদের জাতীয় পর্যায়ে আনার আগে তাই আন্তর্জাতিক উপযোগী করে তোলার কাজে মনোযোগী হওয়া খুব জরুরি। যুব দলের হয়ে খুব ভালো করা খেলোয়াড়দের মধ্যে যারা বেশি প্রতিভাবান তাদের একসঙ্গে রেখে সারা বছর ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের মান বৃদ্ধির চেষ্টা খুব জরুরি।

যাতে তারা অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় শেষ করে অন্য টেস্ট খেলুড়ে দেশের ‘এ’ দলের সাথে খেলে নিজেদের আন্তর্জাতিক মান উপযোগী করে তুলত পারে, সে ব্যবস্থাটা সবার আগে করা খুব জরুরি।

বিসিবি যে তা করে না, তা নয়। তবে সেই কাজটা যতটা সাজানো গোছানো ও একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার ভেতর হওয়া দরকার, তা হয় না। আর তাই অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে জাতীয় দলে আসার মাঝখানে যে গ্যাপ, শূন্যতা বা কমতি-ঘাটতিটা পূরণ হয় না। মোটকথা, অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে বিশ্বপর্যায়ে খেলার আগে ক্রিকেটারদের ঘষা-মাজার কাজটা তত সাজানো গোছানো ও সুবিন্যস্ত নয়। তাই অনূর্ধ্ব-১৯ এ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর এশিয়া সেরা হলেও বাংলাদেশ জাতীয় দল কখনো এশিয়া কাপ জেতেনি। আর বিশ্বকাপে তো সেমিফাইনালেই ওঠা সম্ভব হয়নি।

তাই অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ট্যালেন্টেড ক্রিকেটারদের জাতীয় দলের জন্য তৈরি করার উদ্যোগটা ক্রিকেট বোর্ডেরই নিতে হবে। সেই কাজে ক্রিকেট অপারেশন্স, গেম ডেভেলপমেন্ট এবং এইচপি ইউনিটের একটা সমন্বয় খুব জরুরি। ক্রিকেট বোর্ডের একটা লক্ষ্য বা মিশন থাকা খুব প্রয়োজন। যাতে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে আমরা যাদের হাত ধরে সাফল্য পেয়েছি জাতীয় দলেও যেন তাদের কাছ থেকে তেমন পারফরম্যান্স পাওয়া যায়। তারা যেন নিজেদের বিকশিত করতে পারে ও আরও উন্নত করতে পারে- সেই কার্যকর উদ্যোগ ও বাস্তবমুখী কার্যক্রমটা বিসিবির নেওয়া দরকার।

পাশাপাশি যুবাদেরও দায়িত্ব-কর্তব্যও প্রচুর। যেসব ক্রিকেটার অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় পেরিয়ে জাতীয় দলে যান তাদেরও দায় আছে। তাদেরও বুঝতে হবে, উপলব্ধি করতে হবে যে অনূর্ধ্ব-১৯ আর জাতীয় দল মানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মাঝে বিস্তর ফারাক। তারা যে মেধা, সামর্থ্য আর স্কিল-টেকনিক নিয়ে যুব পর্যায়ে সফল হয়েছেন, মহাদেশীয় ও বিশ্ব পর্যায়ে ভালো খেলেছেন, ঠিক সেই মান, মেধা, সামর্থ্য আর টেকনিক ও স্কিল দিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কিছুতেই সফল হওয়া সম্ভব নয়। দুটোর গুণগত আর মানগত পার্থক্য বিস্তর।

কাজেই যুবাদের একটা উপলব্ধি খুব জরুরি, তাহলো- আমাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য উপযুক্ত করে তুলতে হবে এবং এটা শুধু ক্রিকেট বোর্ডের কাজ নয়, আমার বা আমাদেরও দায়িত্ব।

কার কোথায় ঘাটতি, দুর্বলতা, সামর্থ্যে কমতি আছে- সব নিজে থেকেই খুঁজে বের করে উচ্চতর প্রশিক্ষকদের সাথে কথা বলে উন্নত করার জোর তাগিদ অনুভব করা খুব প্রয়োজন। কে কোন কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে পারেন জলদি, কার কোন উইকেটে সমস্যা হয়, কে ফাস্ট ও বাউন্সি ট্র্যাকে অসচ্ছন্দবোধ করেন, কে কোথায় কোন পিচে সাবলীল, কার স্পিনে দুর্বলতা আর কে ফ্ল্যাট পিচে খুব অনায়াসে নিজের মতো করে খেলতে পারেন- এসব উপলব্ধি ও অনুভব থাকা অনেক বেশি প্রয়োজন। একই কথা প্রয়োজ্য বোলরদের ক্ষেত্রেও।

তাদেরও নিজের সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা জন্মাতে হবে। আমার সত্যিকার সামর্থ কী? আমি কী পারি, আর কী পারি না? তা জেনে-বুঝে কোচদের সাথে কথা বলে সে ঘাটতি, কমতি কমিয়ে ভালো করার কাজে মনোযোগী ও ব্রত হওয়াই কাজ। নিজের উদ্যোগে এসব কাজ করে ফেলতে পারলে অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য নিজেকে তৈরি করা সহজ ও সম্ভব।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..